কবি, শিশুসাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক, সম্পাদক, অনুবাদক, চিত্রকর, চিত্রগ্রাহক এবং বিশ্বভ্রামণিক অমরেন্দ্র চক্রবর্তী-র প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা পঁয়ত্রিশ।
'কবিতা-পরিচয়', 'কর্মক্ষেত্র', 'ভ্রমণ', 'পেশাপ্রবেশ', 'কালের কষ্টিপাথর', 'ছেলেবেলা', 'নারীযুগ' পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক, ওয়ার্ল্ড এডিটর্স ফোরামের তৎকালীন একজিকিউটিভ মেম্বার অমরেন্দ্র চক্রবর্তী বিশ্বের নানা দেশে সংবাদপত্র ও পত্রিকা সম্পাদকদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। সেইসঙ্গে ইউরোপের বিভিন্ন সংবাদপত্র-প্রতিষ্ঠানে প্রকাশনা প্রযুক্তি ও সংবাদ পরিবেশনের বিবর্তন বিষয়ে শিক্ষালাভ করেন।
'ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অব পোয়েটস'-এর আমন্ত্রণে বিশ্ব কবি সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন কয়েকটি দেশে। প্রধানত 'ওয়ার্ল্ড এডিটর্স ফোরাম'-এর সম্পাদক-সম্মেলন ও 'ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অব পোয়েটস'-এর কবি সম্মেলনে যোগদানের সুযোগে ও 'ভ্রমণ' পত্রিকার জন্য ভ্রমণচিত্র তৈরির তাগিদে ছবি তোলেন। আন্টার্কটিকা, আলাস্কা, আফ্রিকা, সুমেরুবৃত্ত, মোঙ্গোলিয়া, বুলগেরিয়া, জর্ডন, ইজরায়েল ইত্যাদি দেশ ও দুর্গম অঞ্চলের ওপর তাঁর হাতক্যামেরার ভিডিওচিত্র টেলিভিশন চ্যানেলে দীর্ঘকাল নিয়মিত সম্প্রচারিত। অমরেন্দ্র চক্রবর্তীর প্রথম আলোকচিত্র প্রদর্শন ২০১৪ সালে অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস-এ। তাঁর একক চিত্র- প্রদর্শনী ২০১৬ ও ২০১৮-তে কলকাতায়। তাঁর সাহিত্যসম্ভারে রয়েছে সাতটি কবিতাপুস্তক-সহ শিশু-কিশোর সাহিত্য, গল্প, উপন্যাস, ভ্রমণকথা । এযুগের পদাবলী 'ক্ষণের বচন' রচনা করেন 'ক্ষণকথক' ছদ্মনামে।
এই বইতে রয়েছে দুটি উপন্যাস - 'অশথগাছের চারা' আর 'জলে ভাসা জীবন'। করোনা অতিমারির সময়ে পৃথিবীব্যাপী যে হাহাকার চলছে তার প্রেক্ষাপট নিয়ে রচিত প্রথম উপন্যাসটি 'অশথগাছের চারা'। পাতায় পাতায় ধরা আছে করোনাকালের চিত্র। এত সব প্রথা-পার্বণ, মেলা-উৎসব কারও অভিশাপে বন্ধ। পৃথিবী স্তব্ধ। কিন্তু জীবন থেমে থাকে না, মৃত্যুর মিছিলের পাশাপাশি মানুষের জন্মও হয়, স্বপ্নও জাগে।জীবনের স্রোত ধরে নায়ক আদিত্যর জীবনেও প্রেম আসে। নারী আসে। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় তারকা চলচ্চিত্রের নায়িকার সান্নিধ্যে আসে সে। সবমিলিয়ে অদ্ভূত এক নাটকীয় এবং রহস্যময় এই উপন্যাস। 'এখান থেকে আমরা কোথায় যাব , বাবা?''যেখানে হোক। যেদিকে দু-চোখ যায়।' সুস্থিরের অনেক ভাবনা, অনেক প্রশ্ন। দধীচি তখনও জানত না, সুস্থির একদিন তার কাছে জানতে চাইবে 'সমুদ্রের ঢেউয়ের মাথায় লাল লাল ওগুলো কী? সূর্যডোবার রং, না মানুষের রক্ত। পুলিশের ভয়ে যারা নৌকা নিয়ে পালাতে গিয়ে হারিয়ে গেল, তাদের? এক নদী থেকে আরেক নদীতে, কখনও সাগরে ভাসতে ভাসতে 'জলে ভাসা জীবন' আসলে যেন পিতাপুত্রের জীবনজড়ানো প্রশ্নোত্তরের এক অশেষ তরঙ্গমালা।